Categories
রিডিং

আইইএলটিএস রিডিং টেস্ট প্রস্তুতি কিভাবে নেয়া উচিত

টেস্ট ডে-তে লিসেনিং টেস্ট হয়ে যাওয়ার পরে আইইএলটিএস রিডিং টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। এই টেস্টের মূল কথা হলো আপনি বিভিন্ন রচনা পড়ে কতটা অনুধাবন করতে সক্ষম তা যাচাই করা। আইইএলটিএস -এ স্কোর বাড়ানোর দুটো সেকশন রয়েছে, তার একটি হলো রিডিং টেস্ট।

রিডিং টেস্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ
একাডেমিক নাকি জেনারেল ট্রেনিং
পরীক্ষা পদ্ধতি
প্রশ্নের ধরণ
অবশ্যই মনে রাখতে হবে যা
কিভাবে মার্কিং করা হয়
প্রস্তুতি কিভাবে নেয়া উচিত
কিভাবে উত্তর করবেন
প্রয়োজনীয় রিসোর্স

রিডিং টেস্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ

সাধারণভাবে, আইইএলটিএস এর প্রত্যেকটি টেস্টই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাছে রিডিং টেস্ট আরেকটু বেশী গুরুত্ব বহন করে। এর অন্যতম কারণ হলো – রিডিং টেস্ট এ বেশী স্কোর তোলা সম্ভব যা অন্যান্য ক্ষেত্রে স্কোরের ঘাটতিকে পুষিয়ে দিতে পারে।

রিডিং টেস্টের গুরুত্বের আরেকটি কারণ হলো – বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আপনার এই রিডিং দক্ষতাকে গুরুত্বের সাথে দেখতে পারে। মাস্টার্স বা পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনার ক্ষেত্রে রিডিং স্কিল খুবই জরুরী কারণ সেখানে প্রচুর রেফারেন্স বই, আর্টিকেল ইত্যাদি পড়তে হয়। যদিও এই দক্ষতা সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়ে যায়, তথাপি শুরুতেই মিনিমাম দক্ষতাটুকু নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ কারণে আইইএলটিএস প্রস্তুতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আইইএলটিএস রিডিং প্রস্তুতি।

একাডেমিক নাকি জেনারেল ট্রেনিং

আইইএলটিএস রিডিং টেস্ট দুই প্রকারের হয়ে থাকে। একাডেমিক এবং জেনারেল টেস্ট। আপনি বিদেশে পড়াশোনা করতে আগ্রহী এবং এ কারণে আইইএলটিএস স্কোর প্রয়োজন, তাহলে আপনাকে একাডেমিক রিডিং টেস্ট দিতে হবে। অন্যদিকে, পড়াশোনা নয় বরং অন্য কোন উদ্দেশ্যে আইইএলটিএস স্কোর প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে আপনাকে জেনারেল ট্রেনিং টেস্ট-এ অংশ নিতে হবে। সাধারণ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউকে, নিউজিল্যান্ড-এ স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য জেনারেল ট্রেনিং স্কোর প্রয়োজন হয়।

বলে রাখি, আপনি একাডেমিক টেস্ট দিতে চাচ্ছেন নাকি জেনারেল ট্রেনিং – সেটা আইইএলটিএস রেজিস্ট্রেশনের সময়ই নিশ্চিত করতে হয়। ফলে বিভ্রান্ত হবার কোন অবকাশ নেই।

এই পোস্টে আমি আইইএলটিএস রিডিং (একাডেমিক) টেস্ট নিয়ে বলবো। জেনারেল ট্রেনিং নিয়ে অন্য কোন পোস্টে বলা হবে।

পরীক্ষা পদ্ধতি

আইইএলটিএস রিডিং টেস্ট-এ আপনাকে মোট ৬০ মিনিট সময় বরাদ্দ দেয়া হবে। এক মিনিট কম বা বেশী নয়। এই সময়ের মধ্যে আপনাকে তিনটি রচনা পড়তে হবে এবং রচনা থেকে করা বিভিন্ন ধরণের প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। প্রত্যেক রচনার জন্য বিশ মিনিট সময় পাওয়া যাবে – এমনটি উল্লেখ করা থাকতে পারে। তবে, এটা বাধ্যতামূলক নয়। কোন রচনায় সময় বেশী নিলে অন্যগুলোয় আপনি সময় কম পাবেন তাই সময়ের মধ্যেই শেষ করার চেষ্টা থাকা উচিত।

প্রশ্নের ধরণ

আইইএলটিএস রিডিং টেস্ট-এ মোট ৪০টি প্রশ্ন থাকবে। প্রত্যেক রচনা থেকে ১৩/১৪টি করে প্রশ্ন। অনেক ধরণের প্রশ্ন হতে পারে। সবচেয়ে কমন প্রশ্ন হলো হেডিং ম্যাচ। প্রত্যেক রচনায় A, B, C ইত্যাদি দিয়ে প্যারাগ্রাফ থাকবে। সাধারণত ৮-১০ টি প্যারাগ্রাফ থাকে। প্রশ্নে কতগুলো শিরোনাম দেয়া থাকবে। কোন শিরোনাম কোন প্যারাগ্রাফের সাথে মিলে যাচ্ছে সেটা আপনাকে উত্তর দিতে হবে।

হেডিং ম্যাচ প্রশ্নের আরেকটি ধরণ থাকতে পারে। ইনফরমেশন ম্যাচিং। কিছু ইনফরমেশন দেয়া থাকবে। সেগুলো কোন প্যারাগ্রাফে আছে তা আপনাকে বের করে উত্তর করতে হবে।

এমনকি, পুরো রচনাটি কী ধরণের রচনা, তার উপযুক্ত শিরোনাম কী হতে পারে তাও আপনাকে বের করতে বলা হতে পারে।

এছাড়া, আইইএলটিএস রিডিং টেস্টে শূন্যস্থান পূরণ এবং মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন থাকতে পারে। এ সকল প্রশ্ন লিসেনিং টেস্টের মতই হয়ে থাকে। ফলে আলাদা প্রস্তুতি নেয়ার দরকার হয় না।

অবশ্যই মনে রাখতে হবে যা

লিসেনিং টেস্টে যেমন প্রশ্ন থেকে উত্তরপত্রে উত্তর স্থানান্তরের জন্য ১০ মিনিট দেয়া হয়, আইইএলটিএস রিডিং টেস্টে কিন্তু তা দেয়া হবে না। মোট ৬০ মিনিটের মধ্যেই উত্তরপত্রে উত্তর স্থানান্তর করে নিতে হবে।

লিসেনিং টেস্টের মতো এখানেও পেন্সিলে উত্তর লিখতে হবে। কোনভাবেই কলম ব্যবহার করা যাবে না।

কিভাবে মার্কিং করা হয়

আইইএলটিএস রিডিং এ ৪০টি প্রশ্নের প্রতিটির জন্য নাম্বার বরাদ্দ ১। উত্তর ভুল হলে কিংবা ফাঁকা রাখলে কোন নাম্বার কাটা হয় না। কতগুলো উত্তর সঠিক হলে স্কোর কত হবে তার একটি তালিকা দিয়ে দিচ্ছি, এখান থেকেই রিডিং এ কতটি উত্তর সঠিক করতে হবে সেই বিষয়ে নিজের লক্ষ্য ঠিক করে নিন।

আইইএলটিএস রিডিং

প্রস্তুতি কিভাবে নেয়া উচিত

প্র‍্যাকটিস, প্র‍্যাকটিস আর প্র‍্যাকটিস। আইইএলটিএস রিডিং এ ভালো করার জন্য এর কোন বিকল্প নেই। রিডিং এর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রচনাগুলো পরে উত্তর বের করে তারপর উত্তরপত্রে উত্তর স্থানান্তর করা।

একটানা ৭০ মিনিট সময় নিয়ে প্র‍্যাকটিস করুন। ৬০ মিনিটে টেস্ট দিন, ১০ মিনিটে উত্তর মিলিয়ে নিন। যদি এত সময় বের করা কঠিন হয়, তাহলে কমপক্ষে ২৫ মিনিট সময় নিয়ে ২০ মিনিটে একটি সেকশন শেষ করুন এবং পরের ৫ মিনিটে উত্তর মিলিয়ে নিন।

অবসর সময়ে ইংরেজি পত্রিকা, গল্পের বই, ম্যাগাজিন পড়ুন। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, ইকনোমিস্ট, টাইমস, রিডার্স ডাইজেস্ট পড়তে পারেন। তবে খুব কাটখোট্টা টাইপের রচনা বাছাই করার প্রয়োজন নেই। মনে রাখবেন, আইইএলটিএস রিডিং টেস্টে সাধারণত ইন্টারেস্টিং আর্টিকেল থেকে প্রশ্ন করা হয়।

কিভাবে উত্তর করবেন

লিসেনিং টেস্ট শেষ হবার পরে ৫-৭ মিনিট সময় পাওয়া যায়। এ সময় আপনার লিসেনিং টেস্ট এর প্রশ্নপত্র ফিরিয়ে নেয়া হবে, আইইএলটিএস রিডিং টেস্ট এর প্রশ্ন দেয়া হবে এবং কিছু নির্দেশনা দেয়া হবে।

টেস্ট শুরু হলে প্রথমেই প্রথম রচনার শিরোনাম পড়ে নিন। তারপর সোজা চলে যান প্রশ্নের অংশে। প্রশ্নগুলো ভালো করে পড়ুন। প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ শব্দ, নাম ইত্যাদির নীচে দাগ দিন।। এবার রচনা পড়া শুরু করুন। ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড পড়ার চেষ্টা করবেন না। স্কিম করুন, অর্থ্যাৎ, ছোট ছোট লাফ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ শব্দগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করুন, আন্ডারলাইন করুন। এভাবে আপনি রচনা সম্পর্কে একটি ধারণা পেয়ে যাবেন।

প্রাথমিক ধারণা পাওয়ার পরে আপনি উত্তর করা শুরু করুন। কিছু উত্তর সহজেই পেয়ে যাবেন, সেগুলো লিখে ফেলুন। শূণ্যস্থান পূরণ করা অপেক্ষাকৃত সহজ। এগুলো আগে সমাধানের উদ্যোগ নিন। কোনোটা না পারলে রেখে দিন। হেডিং ম্যাচ করার চেষ্টা করুন। হেডিং ম্যাচ একটু কঠিন মনে হতে পারে। প্র‍্যাকটিস করলে সহজ হয়ে যাবে।

আইইএলটিএস রিডিং টেস্ট-এ সাধারণত প্যারাগ্রাফের ধারাবাহিকতা অনুযায়ীই প্রশ্ন করা হয়। এর ফলে কোন প্রশ্নের উত্তর কোথায় পাওয়া যেতে পারে তা বোঝা সহজ হয়। সে অনুযায়ীই উত্তর খুঁজে নিন। আরও একটি বিষয় হলো, সাধারণভাবে রচনার মধ্যে যে শব্দ থাকে সেটাই উত্তর হবার সম্ভাবনা বেশী, তবে পরিবর্তন করা প্রয়োজন হতেও পারে। তাই, গ্রামারের শুদ্ধতা নিশ্চিত করুন।

উত্তর লিখার সময় বানান দেখে নিন। বানান ভুল হলে উত্তর ভুল, সুতরাং কোন বানানই ভুল করা যাবে না। প্রশ্নের নির্দেশনা অনুযায়ী এক, দুই বা তিন শব্দ এবং/অথবা সংখ্যা ব্যবহার করে উত্তর দিন। কোনোভাবেই নির্দেশনার লংঘন করবেন না।

সর্বশেষ, উত্তরপত্রে উত্তর স্থানান্তরের সময় যত্নবান হোন, এখানেও ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে। সময় থাকলে, বারবার নিশ্চিত হয়ে নিন।

প্রয়োজনীয় রিসোর্স

আইইএলটিএস রিডিং টেস্ট এর প্রস্তুতির জন্য কিছু ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখা যেতে পারে, চাই কি দুই একটি ওয়েবসাইটও। তবে, প্রচুর প্র‍্যাকটিস করতে হবে। এজন্য বই বা প্রিন্টেড কাগজ/ফটোকপি ব্যবহার করা উচিত। তবে, আপনি যদি কম্পিউটার বেজড টেস্ট দিতে চান, তাহলে কম্পিউটারে প্র‍্যাকটিস করাই ভালো। অবশ্য, হুবহু কম্পিউটার টেস্টের সিমুলেশন পাওয়া ব্যয়সাপেক্ষ। যাহোক, বই, ওয়েবসাইট, ভিডিও ইত্যাদির লিংক পাওয়া যাবে আইইএলটিএস রিসোর্স সেন্টারে

শেষ কথা

রিডিং টেস্ট এর চ্যালেঞ্জ হলো সময়মতো সব উত্তর করা। সুতরাং প্র‍্যাকটিসের কোন বিকল্প নেই। ভীত হবেন না, কারণ রিডিং টেস্ট রাইটিং টেস্টের তুলনায় সহজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *